Wednesday, November 27, 2019

ফল্গু নদী গয়ার পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে, এটি হিন্দুদের কাছে একটি পবিত্র নদী। বনে বেশ আনন্দে আছেন মাতা সীতাদেবী। একদিনের কথা । এক বছর অতিকান্ত হয়েছে। একদিন রাজা দশরথ , সীতাদেবীকে দর্শন দিলেন । সীতাদেবী দশরথের আত্মাকে দেখে প্রনাম জানিয়ে বললেন- “পিতা আপনি কেন বিদেহী অবস্থায়?” দশরথ রাজা বললেন- “পুত্রী! আমি অমৃতলোকে স্থান পেয়েছি। সেখানে জেনেছি তুমি স্বয়ং দেবী হরিপ্রিয়া মাতা কমলা । তোমারই আরাধনা করে বণিক গন। তুমি সম্পদ, ঐশ্বর্যের দেবী। তোমার কৃপায় ভিখারীও চক্রবর্তী সম্রাট হতে পারে। পুত্রী সীতা , তুমি আমাকে বালি দ্বারা পিন্ড প্রদান করো । তোমার পিণ্ড প্রাপ্তি করে আমি তৃপ্ত হবো। তুমি আমার কাছে রামের সমান । ” সীতা দেবী তখন ফল্গু নদী, ব্রাহ্মণ, তুলসী বৃক্ষ, বট বৃক্ষ কে সাক্ষী রেখে দশরথ রাজার নামে বালির পিণ্ড দিলো। সে সময় রাম লক্ষণ সেখানে ছিলো না। পড়ে রামচন্দ্র ফিরে এসে সীতাদেবীর হস্তে বালুকা দেখে বললেন- “জানকী। তুমি বুঝি বালুকা দ্বারা ক্রীড়া করছিলে ?” সীতাদেবী বললেন- “না প্রভু। আপনি যখন ছিলেন না তখন শ্বশুর মহাশয় আমাকে দেখা দিয়ে আমার কাছে বালুকার পিণ্ড চাইছিলেন। তাই দিয়েছি।” রামচন্দ্র ভাবলেন একটু কৌতুক করা যাক। তিনি বললেন- “তাই ? এই ঘটনার সাক্ষী কে? পিতা কেন পুত্রবধূর কাছে পিণ্ড চাইবেন? এই ঘটনার প্রমান কি?” সীতা দেবী বললেন- “চলুন । ফল্গু নদী, ব্রাহ্মণ, তুলসী বৃক্ষ, বট বৃক্ষ সাক্ষী আছেন। আপনি তাহাদিগের নিকট প্রশ্ন করুন!” রামচন্দ্র কে নিয়ে গিয়ে জানকী দেবী ব্রাহ্মণকে বললেন- “হে বিপ্রদেব! বলুন ত আমি পিণ্ড দিয়েছি কিনা। আপনি ত সব দেখেছেন। আমার স্বামীর কাছে যা দেখেছেন তাই ব্যক্ত করুন।” ব্রাহ্মণ বলল- “কই না তো! তুমি আবার কখন পিণ্ড দিলে? আমি তো দেখিনি । কেন মিথ্যে সাক্ষী দিতে আমাকে বলছ? আমি ব্রাহ্মণ বংশীয় । মিথ্যা বলি না। মিথ্যা বলা পাপ।” সীতা দেবী রেগে ব্রাহ্মণকে শাপ দিলেন-
এর মানে যতই ঘরে দ্রব্য থাকুক, ব্রাহ্মণ তবুও ভিক্ষা বা চেয়ে বেড়াবে। এই অভিশাপ কলিযুগে আরোও প্রভাব শালী । প্রমাণ তো আপনারাই নিজ চোখে দেখেন । এরপর সীতাদেবী তুলসীকে বললেন- “হে হরির প্রিয়া বৃন্দারানী। বল ত । আমি পিণ্ড দিয়েছি কিনা? সত্যি বল।” তুলসী বলল- “না আপনি পিণ্ড দেননি । কোথায় দিলেন ? আমি ভগবান হরির পাদপদ্মে বিরাজ করি। মিথ্যা আমি বলবো না। ধর্মে সইবে না।” জানকী দেবী রেগে বললেন- “তুমি হরির পাদপদ্মে থাকো, অথচ তোমার মুখে এমন অসত্য বচন । আমি যদি সত্য হই তবে আমার অভিশাপ অক্ষরে অক্ষরে ফলবে। তোমাকে শাপ দেবো।”
তুলসী দেবী যেখানে সেখানে জন্মায়। এমনকি দেওয়ালেও জন্মায়। যারা গ্রামে থাকেন তারা দেখবেন তুলসী মঞ্চে উঠে কুকুর মূত্র ত্যাগ করে। আবার মুরগী তুলসী গাছে বিষ্ঠা ত্যাগ করে। তাই হিন্দু বাড়ীতে মুরগী পালন নিষিদ্ধ। এমনকি এক সময় মুরগীর ডিম্ব ও মুরগী ভক্ষণ হিন্দু গৃহে নিষেধ ছিলো। এখন অবশ্য এই সব নিয়ম হিন্দুরাই জলাঞ্জলি দিয়ে দিয়েছেন ।
এরপর সীতাদেবী ফল্গু নদীকে জিজ্ঞেস করলেন- “বল নদী । তুমি তো দেখেছো। এখানে আমার শ্বশুরের আত্মা এসেছিলেন। আমার কাছে পিণ্ড চেয়েছিলেন। আমি দিয়েছি। রঘুনাথকে সব সত্য বল।” ফল্গু বলল- “জানকী দেবী। আপনি কেন রঘুনাথের সামনে অসত্য বলছেন ? আমাকে কেন মিথ্যা বলতে বলছেন। আমি পবিত্র নদী। এই গয়াধামে আমার জলে সকলে পিণ্ড দেয়। আমি কিভাবে মিথ্যা বলি? এখানে স্বর্গীয় রাজা দশরথের আত্মা আসেন নি। আর আপনিও পিণ্ড দেন নি।” সীতাদেবী ক্রোধে বললেন-
সীতাদেবীর অভিশাপে ফল্গু নদীর উপরে বালির চড়া পড়লো। একটু খুঁড়লে সেখানে জল পাওয়া যায়। আজও পবিত্র গয়া ধামে ফল্গু নদী এইভাবে আছে । রামচন্দ্র কৌতুকে মজা পাচ্ছিল্লেন। তিনি বললেন- “সীতা । আর প্রমাণ আছে কি?” সীতাদেবী তখন বট বৃক্ষকে বললেন- “বাছা বট! তুমি তো সত্যি বল। নাহলে স্বামী ভাববেন আমি অসত্য বলছি ।তুমি বল যে এখানে আমি আমার শ্বশুরের উদ্দেশ্যে বালিকার পিণ্ড দিয়েছি।” বট ভক্তিভাবে বলল- “মাঃ । প্রভু রামচন্দ্র অন্তর্যামী। তিনি সব জানেন। তবুও আমি বলছি- আমি দেখেছি আপনার শ্বশুর তথা শ্রীরামচন্দ্রের
পিতা স্বর্গীয় রাজা দশরথের আত্মা এখানে এসে আপনাকে পিণ্ড দিতে বলেছিলেন। আপনি বালুকা দ্বারা পিণ্ড দিয়েছেন। আমি এই ঘটনার সাক্ষী।” বট বৃক্ষ এরপর রামচন্দ্রকে প্রনাম জানিয়ে বললেন- “প্রভু! আমি এর সাক্ষী। মাতা সীতা ঠিক বলেছেন। সেই ব্রাহ্মণ, তুলসী আর ফল্গু নদী আপনাকে মিথ্যা বলেছে।” সীতাদেবী বললেন- “বাবা বট! তোমায় আশীর্বাদ করি, তুমি চিরজীবি ও অক্ষয় হও।” এই জন্য দেখবেন বট বৃক্ষের ঝুড়ি নামে, সেখান থেকে অপর গাছ হয়। বট বৃক্ষ তলে দেবতারা থাকেন। সাধনার উপযুক্ত যে বৃক্ষ গুলি আছে তাদের একটি বট বৃক্ষ । রাম সীতার যুগল রূপ দেখে বট বৃক্ষ ধন্য হল। অতঃ রামচন্দ্র , সীতাদেবীকে বললেন- “জানকী! আমি তোমার কথা বিশ্বাস পূর্বেই করেছিলাম। কৌতুকচ্ছলে তোমার সাথে ঠাট্টা করেছি।” অপরদিকে দশরথের আত্মা রামসীতাকে দেখা দিলেন। বললেন- “পুত্র রাম আমি সীতাপ্রদত্ত বালুকার পিণ্ড তৃপ্তির সহিত নিয়ে প্রসন্ন হয়েছি। আমি সীতাকে এরূপ আদেশ করেছিলাম।” রাম সীতা দশরথ রাজাকে প্রনাম জানালেন ।

Friday, November 22, 2019

ওঁ ইন্দ্রং বর্ধম্তো অপ্তুরঃ কৃণ্বন্তো বিশ্বমার্যম।
অপঘ্নন্তো অরাবণঃ।। ঋগ্বেদ ৯/৬৩/৫
অনুবাদ: হে আর্য্যগণ ( মনুষ্যগণ) তোমরা ঈশ্বরের মহিমাকে বর্ধিত কর, স্বত্ত্বাপ্রহারী অনার্য্যগণকে সমুচিত শিক্ষা দান কর এবং সমগ্র বিশ্ববাসীকে বৈদিক (আর্য্য) ধর্মে দীক্ষিত করিতে থাক।
ভাবার্থ : পরমপিতা পরমাত্মা সন্তানরূপ আমাদেরকে উপদেশ দিয়েছেন দে, তোমরা অলস হয়ো না, বৈদিক কর্মকারী হও, তাঁর অপার মহিমাকে বিস্তার করো। অসৎ এর বিনাশ করে সকলকে আর্য করে গড়ে তুলো, সকলকে মহৎ করে গড়ে তুলো।
হিন্দু! তুমি কি জাননা তুমি শক্তির পূজক, মহাশক্তির উপাসক? তোমার সেই শক্তির সাধনা কোথায়? শিবের হাতে ত্রিশূল, তাহা দেখে তুমি কী চিন্তা করবে? শ্রীকৃষ্ণের হাতে সুদর্শন, তা দেখে তুমি কী ভাববে? কালীর হাতে রক্তাক্ত খড়গ, দুর্গার হাতে দশপ্রহরণ, তা দেখে তুমি কী শিক্ষা লাভ করবে? এই মহা শক্তির সাধনা করে মানুষ দুর্বল হতে পারে কি? একবার স্থীর হয়ে চিন্তা কর।

Monday, November 18, 2019

Vedic: ১২ নভেম্বর দিবাগত রাত ৩ টায় আনুমানিক শান্তির শহর...

Vedic: ১২ নভেম্বর দিবাগত রাত ৩ টায় আনুমানিক শান্তির শহর...: ১২ নভেম্বর দিবাগত রাত ৩ টায় আনুমানিক শান্তির শহর শ্রীমঙ্গলের ভূনবীর ও ভীমশী, বাবুর বাজার এলাকায় ৭ টি মন্দির গোপনে হামলা করে মন্দিরের ...

Wednesday, November 13, 2019

১২ নভেম্বর দিবাগত রাত ৩ টায় আনুমানিক শান্তির শহর শ্রীমঙ্গলের ভূনবীর ও ভীমশী, বাবুর বাজার এলাকায় ৭ টি মন্দির গোপনে হামলা করে মন্দিরের দেবতার মূর্তি ভাঙচুর করে এবং পূজার দ্রবাদি লুটপাট করে নিয়ে যায়।
আক্রান্ত জায়গা গুলো হচ্ছে ভূনবীর পাল পাড়া সার্বজনীন দুর্গাবাড়ি, হরগৌরি মন্দির ভীমশী, মহাদেব মন্দির ভীমশী, মদনমোহন জিউর আখড়া ভীমশী, দীনেশ লাল রায়ের বাড়ির মন্দির, উত্তম মিশ্রের বাড়ির মুর্তি ও তৃপ্তি আচার্য এর বাড়ির মহাদেব মুর্তি।
প্রশ্ন হচ্ছে কারা এই শান্তির শহরের শান্তি নষ্ট করতে চাইছে?
যারা বলছেন এটাকে চুরি তাদের কাছে একটাই প্রশ্ন চুরের উদ্দেশ্য কি চুরি করা নাকি প্রতিমা ভাংচুর ?
যদি চুরি করা হয় তাহলে কেন প্রতিমা ভাংচুর করবে ?
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার জোড় দাবী জানাই।


Thursday, November 7, 2019

বীর্য মন্ত্র/ শক্তি মন্ত্র

ওঁ তেজোহসি তেজো ময়ি ধেহি।
ওঁ  বীর্য্যমসি বীর্য্যং  ময়ি ধেহি।
ওঁ  বলমসি বলং  ময়ি ধেহি।
ওঁ  ওজোহসি ওজো  ময়ি ধেহি।
ওঁ  মন্যুরসি মন্যুং  ময়ি ধেহি।
ওঁ  সহোহসি সহো  ময়ি ধেহি।

অনুবাদঃ-
হে ভগবান তুমি তেজ স্বরুপ আমাকে তেজ দান কর।
তুমি বীর্যস্বরুপ আমাকে বীর্যবান কর।
তুমি শক্তির মূর্ত বিগ্রহ স্বরুপ আমাকে শক্তিদান কর।
তুমি অফুরন্ত ওজো (জীবনীশক্তি) স্বরুপ আমাকে ওজস্বী কর।
তুমি অন্যায়ের দণ্ডদাতা ক্রুধস্বরুপ আমাকে অন্যায়ের প্রতিরোধ শক্তিদান কর।
তুমি সহ্যশক্তির ঘ্ণীভূত মূর্তীস্বরুপ আমাকে সহীষ্ণুতা দান করুণ।
শ্রীমদ্ভগবদগীতার কিছু গুরুত্ত্বপূর্ণ তথ্যঃ-

শ্রীমদ্ভগবদগীতায় ৭০০ টি শ্লোক আছে যার মধ্যে
ধৃতরাষ্ট্র বলেন ১ টি
সঞ্জয় বলেন ৪০ টি
অর্জুন বলেন ৮৫ টি
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেন ৫৭৪ টি =৭০০ টি শ্লোক
যা মহাভারতের ভীষ্মপর্ব এর ২৫ থেকে ৪২ অধ্যায় পর্যন্ত বর্ণিত হয়েছে যা গীতা বা গীতোপনিষদ নামে পরিচিত।
যা পড়লে ঈশ্বর, প্রকৃতি, জীব, কাল ও কর্ম সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
গীতায় অর্জুনের ২০ টি নাম ও ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এর ৩৩ নাম এর উল্লেখ আছে।